দ্রুত ওজন বৃদ্ধির ৫ টি সহজ উপায়

আপনি কি প্রতিনিয়ত দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করার উপায় খুঁজে যাচ্ছেন কারণ সবসময় রোগা এবং দুর্বল বোধ করেন?

তাহলে আপনাকে বেশি খোঁজাখুঁজি করতে হবে না।

এখানে আমরা আপনার জন্য চিকন বা রোগা থেকে কিভাবে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করা যায় তার কিছু উপায় সম্পর্কে জানাবো এবং ওজন বৃদ্ধি নিয়ে ৭ টি কমন প্রশ্নের উত্তরও দিব। 

কখন ব্যায়াম করলে ওজন বাড়ে?

ওজন বৃদ্ধি করার জন্য বিকেলবেলা হল ব্যায়াম করা সবচেয়ে ভালো সময় ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ার পর ব্যায়াম করা হচ্ছে ওজন বৃদ্ধি করার একটি সহজ টেকনিক, এজন্য বিকেলবেলা হচ্ছে আদর্শ। 

কি কি ফল খেলে ওজন বাড়ে?

আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আখ, পেয়ারা, পেঁপে, আনারস, তরমুজ, কলা, কিসমিস, আখরোট, নারকেল, খেজুর ও আরো ইত্যাদি ফল খেলে ওজন বাড়ে। বিশেষ করে শুকনো ফল ও মিষ্টি জাতীয় ফল খেলে দ্রুত ওজন বাড়ে। তবে ওজন বাড়ানোর সময় টক জাতীয় ফল খাওয়া ঠিক হবে না। 

কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে?

B ভিটামিন, ভিটামিন D, ও ভিটামিন C খেলে ওজন বাড়ে। শরীরে B ভিটামিনের ঘাটতি থাকলে অবশ্যই এটি গ্রহণ করতে পারেন। এটি শরীরের মাসেল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। ভিটামিন B1 এর ঘাটতির কারণে অনেক সময় স্বাভাবিক ওজনের থেকে কম ওজন হয়ে যায়।  এমনটা হলে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরী।

মধু কিভাবে খেলে মোটা হওয়া যায়?

এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। হজম শক্তি বৃদ্ধি হচ্ছে রোগা থেকে মোটা হওয়ার অন্যতম একটি উপায়।  

খেজুর খেলে কি ওজন বাড়ে?

উত্তরটি হচ্ছে – হ্যাঁ, খেজুর খেলে ওজন বাড়ে। 

আগেই বলেছি যে খেজুরের মতো শুকনো ফল গুলো দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন বিকেলবেলা বা সন্ধ্যার নাস্তা করার সময় কিছু শুকনো খেজুর খেয়ে নিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। কারণ খেজুর হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক শক্তির উৎস এবং খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম। 

সকালে খালি পেটে কি খেলে ওজন বাড়ে?

ওজন বৃদ্ধি করার সময় সকালে খালি পেটে প্রথম যে খাবারটি খাওয়া হবে সেটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টায় একটি কলা খেতে পারেন এবং যদি সম্ভব হয় বিভিন্ন ফল খেতে পারেন। তবে প্রথমেই যে কাজটি করবেন সেটি হলো সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি পান করবেন।  একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে ওজন বৃদ্ধি করার সময় সকালে খালি পেটে চা বা কফি কিছুই খাওয়া চলবে না। 

কোন বাদাম খেলে ওজন বাড়ে?

University of Toronto-এর গবেষকদের স্টাডি অনুযায়ী কোন রকমের বাদাম খেলে ওজন বাড়ে না। তবে অনেকের মধ্যে একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে কাজু বাদাম খেলে ওজন বাড়ে, ডাক্তারদের মতে এটি মোটেও সত্য নয়। কারণ কাজুবাদামে থাকে ‘গুড ফ্যাট’ যেটি ওজন বাড়াতে কোনো ভূমিকা পালন করে না। 

দ্রুত ওজন বৃদ্ধির জন্য ৫ টি সহজ ও কার্যকর উপায় 

আপনি যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তাহলে এখানে দেখানো উপায়গুলো আপনার জন্য। এই সব উপায়সমূহ সম্পূর্ন পরিক্ষিত ওজন বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে। 

১) ক্যালরি ইনটেক বাড়িয়ে দেওয়া

ক্যালরি ইনটেক বাড়াতে হলে যেখাবারে বেশি ক্যালরি রয়েছে সেইসব খেতে হবে। কিছু উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খবারের তালিকা নিচে দেওয়া হল যেগুলো খাওয়ার ফলে ক্যালরি ইনটেক বেড়ে যাবেঃ

বাদাম – বাদামে রয়েছে উচ্চ প্রোটিন ও ফ্যাট যেখানে অনেক ক্যালরি পাওয়া যাবে। সকালে নাস্তার বাদামের বাটার ও টোস্ট ওজন বৃদ্ধির ডায়েট লিস্টে থাকলে আরো ভালো কাজে দিবে।

মাংস – মাংসে অনেক উচ্চ ক্যালরি থাকে যা ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকর। মাংসকে গ্রিল বা রোস্ট করে সালাদ সাথে খেতে পারেন। পল্ট্রি মোরগ, শুকরের মাংস, ও খাসির মাংস ওজন বৃদ্ধি করতে সবথেকে বেশি সাহায্য করে।

এছাড়াও ওজন বৃদ্ধি করার খাবারের তালিকায় রয়েছে ঘী, পনির, নারকেল, শিম, দুধ, সাদা ভাত, ড্রাই ফুডসহ ইত্যাদি। 

মোটা হওয়ার জন্য কি কি খেতে হবে? মোটা হওয়ার কিছু খাবারের তালিকা এখানে দেওয়া হলো – দ্রুত ওজন বাড়ে কি খেলে?

২) ওজন বৃদ্ধিকারী সেক পান করা

বিভিন্ন রকমের সেক রয়েছে যেগুলো প্রোটিন পাউডার, দুধ, ফল ও সবজি দিয়ে তৈরি হয়। এইসব সেক ওজন বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে। হালকা ব্যায়াম করার পর ব্যানেনা বা কলার সেক খেলে মাসেল বিল্ড হয়। 

৩) আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে বেশি খাবার গ্রহন করুন

অগে যে পরিমান খাবার খেতেন তার চার ভাগের এক ভাগ পরিমান খাবার বেশি খেতে পারেন। এটি ওজন বৃদ্ধির অনেক কার্যকরি একটি ফর্মুলা। এইজন্য একসাথে বেশি না খেয়ে কিছুক্ষণ পরপর খাবার খান এতে সবসময় পেট ভরা থাকবে। এইজন্য দুই বেলার খাবারের মাঝখানে বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাকস খেতে পারেন।

৪) স্ট্রেন্ট ট্রেইনিং 

কিছুতেই যদি ওজন বৃদ্ধি না পায় তখন এটি হতে পারে একমাত্র সামাধান। স্ট্রেন্ট ট্রেইনিং করার ফলে মাসেল বৃদ্ধি পাবে যেটি ওজন বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষ ভুমিকা রাখবে। এটির ফলে একইসাথে শরীরকে একটি পারফেক্ট শেফও দিবে। 

কিভাবে স্ট্রন্ট টেইনিং করবো?

স্ট্রেন্ট ট্রেইনিং এর জন্য একজন প্রফেশনাল ট্রেইনার রাখলে সবচেয়ে ভালো হয়। যদি না রাখতে পারেন তাহলে নিম্নোক্ত ধাপগুলো দেখতে পারেনঃ

এমন ব্যায়ামগুলো করুন যেগুলো মাসেল বিল্ড করে। যেমন – Squats, deadlifts, bench press 

কিছুদিন এই ব্যায়ামগুলো করার পর আরো বেশি পরিমাণে করার চেষ্টা করুন।

এই ব্যায়ামগুলো করার একটি সিডিউল তৈরি করুন। সিডিউলে অবশ্যই ৩ দিন পরপর একটি গ্যাপ দিবেন এতে মাসেল রেস্ট নিতে পারবে।

সবসময় হাইড্রেটেড থাকুন এই ব্যায়ামগুলো করার সময়। ব্যায়ামের শেষে একটি ব্যানেনা শেক খুব ভালো কাজ করবে।

একটানা ২ মাসের মত করে যান এবং ২ মাস পর নিজের উন্নতি নিজেই দেখতে পারবেন।

৫) পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম 

ঘুগম ওজন বাড়াতে ও কমাতে উভয় ক্ষেত্রে কার্যকর। ওজন বৃদ্ধি করার সময় বিভিন্ন ধরনের ফিজিক্যাল একটিভিটিস করা হয় আর ঘুম শরীরকে রিলাক্স করে দেয়। যখন ঘুম যাওয়া হয় তখন শরীর গ্রোথ হরমোন রিলিজ করে যেটি শরীরের মাসেল টিস্যু  রিপায়ার করে দেয়। আপনি যদি ওজন বৃদ্ধির জন্য স্ট্রেন্ট টেইনিং করেন তাহলর পর্যাপ্ত ঘুম আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। 

সতর্কতাঃ 

সহজ করে বলতে গেলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করার জন্য ব্যায়াম করা, একটি হাই ক্যালোরী ডায়েট মেনে চলা, ও প্রয়োজনবোধে ওজন বৃদ্ধি সাপ্লিমেন্ট আপনার প্রতিদিনকার রুটিনে নিয়ে নিতে হবে।

মনে রাখবেন ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অন্যজনের যে উপায়গুলো কাজে দিয়েছে আপনার ক্ষেত্রেও সেগুলো কাজে দেবে সেটা বলা যায় না। এটি মানুষভেদে আলাদা হয়ে থাকে।

যদি আপনার শরীরের অনেক বড় একটা অংশ ঝেড়ে ফেলতে চান বা অনেক বেশি ওজন কমাতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আপনার কাছে যদি প্রয়োজনীয় মনোবল ও ওজন কমানোর ইচ্ছে থাকে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন। 

Leave a Comment