চুলের যত্নে কি খাওয়া উচিত? (৫টি খাবারের তালিকা)

আপনি কি শুষ্ক, ভঙ্গুর, চিকন চুল নিয়ে চিন্তিত? তাহলে আপনার চুলের দরকার সঠিক ও আরো বেশি পুষ্টি। বিভিন্ন ধরনের খাবার রযেছে যেগুলো চুলের সুরক্ষার জন্য পুষ্টি জোগায়। 

চুলের যত্নে কি কি খাওয়া উচিত? 

আপনার যদি এই প্রশ্নের উত্তর জাননতে চান, তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।

এখানে চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হবে যেগুলো চুলের সঠিক পুষ্টিমান বজায় রাখার পাশাপাশি চুলকে করে তুলবে আরো উজ্জ্বল।

চুলের গ্রোথের জন্য কোন ধরনের খাবার খাওয়া উচিত?

চুলের গ্রোথে যে ধরনের খাবার খেতে পারেন তা হলঃ

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার – ডিম, চিকেন, বাদাম।

ভিটামিন ও মিনারেলস সমৃদ্ধ খাবার – সবুজ সবজি, অ্যাভোকাডো, বেরি।

স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যুক্ত খাবার – অলিভ অয়েল।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার – ডাল, মটরশুঁটির, ডাল।

চুলের যত্নে ৫টি খাবার 

১) ডিম

যদিওবা ডিম খেলে সরাসরি চুলের কোন উপকারে আসে না। এমনিতেই চুলে ডিমের বিভিন্ন প্যাক ব্যবহারে চুলের উপকারে আসে সেটা প্রায় সকলেই জানে৷ তবে ডিম খেলেওযে চুলের বিভিন্ন সমস্যার সামাধান হতে পারে সেটা অনেক কম লোকেই জানে।

ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন যেটি চুলের বৃদ্ধি ও মজবুত করতে পারে। ডিমে বায়োটিন ও জিংকের মতো ভিটামিন ও মিনারেলস থাকে যেটি চুলের ঝড়ে পড়া রোধ করে।

২) সবুজ শাকসবজি

চুলের যত্নে সবচেয়ে বেশি যে খাবার খাওয়া উচিত সেটি হলো বিভিন্ন ধরনের সবুজ ও তাজা শাক-সবজি। এইসবে রয়েছে ভিটামিন A, C, E, আয়রন, জিংক, সেলেনিয়ামের মতো নিউট্রেন্টস  যেগুলোতে রয়েছে চুলকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

এছাড়াও এগুলোর মধ্যে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা চুলের ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে। তাই আপনি যদি চুলকে আরো মজবুত ও উজ্জ্বল করতে চান তাহলে প্রতিদিনকার ডায়েটে শাকা ও সবজিকে অবশ্যই রাখবেন।

৩) বাদাম 

চুলের সুস্থতায় বাদামও একটি কার্যকারী খাবার। আখরোট ও কাজুবাদামে রয়েছে ফ্যাটি এসিড যেটি চুলকে ময়েশ্চারাইজ করতে পারে এবং চুল বাকানো, শুষ্ক হয়ে যাওয়া ও ছিড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা রোধ করে। যেহেতু চুল প্রোটিনের দ্বারা তৈরি তাই চুলের যত্নে প্রোটিন সম্পূর্ন খাবার অন্যতম ভূমিকা পালন করে। আর বাদাম একটি প্রোটিন-রিচ খাবার।

এছাড়াও বাদামে রয়েছে ভিটামিন যেমন – কাজুবাদামে রয়েছে ভিটামিন E   চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কাজুবাদাম ও হিজলি বাদামে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যেটি দেহের প্রদাহ কমায় এবং পত্যক্ষভাবে চুল ঝড়ে যাওয়ার মতো সমস্যার সমাধান করে।

৪) ভিটামিন-C যুক্ত ফল

ভিটামিন-C যুক্ত ফল (লেবু, আপেল, পেয়ারা, লেবু, পেঁপে, কমলা) চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এগুলো খাওয়ার ফলে কোলাজেন উৎপন্ন হয় যেটি চুলের গঠনেও ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফলের এন্টিঅক্সিডেন্ট চুলকে দুষন, UV রশ্মি থেকেও মুক্তি দেয়।

৫) গাজর ও শসা

চুলের যত্নে এই দুটি খাবার বেশ কার্যকর। পুষ্টিবিদদের মতে নিয়মিত গাজার ও শসা খেলে চুলে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। 

গাজর রয়েছে ভিটামিন A যেটি সিবাম উৎপাদন করে। সিবাম মাথার ত্বকে ও চুলের সুরক্ষার জন্য দরকার হয়। এছাড়াও শরীরে ভিটামিন A -এর অভাবে চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। ‘

অন্যদিকে শসায় রয়েছে সিলিকা যেটি চুলকে মজবুত ও ভাঙ্গা প্রতিরোধ করতে পারে। গাজর ও শসা দুটির মাঝে  পানি ও অন্যান্য পুষ্টি ( ভিটামিন-সি, পটাসিয়াম) সমৃদ্ধ যা মাথার ত্বক ও চুলকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।

কোন ধরনের খাবার চুলের ক্ষতি করতে পারে?

কিছু খাবার চুলের ক্ষতির জন্য দায়ী বিশেষকরে চিনিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার। এইসব খাবার প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে যা চুলের গঠনকে দুর্বল করে। এছাড়াও অ্যালকোহল পানের ফলে মাথার ত্বক ডিহাইড্রেট হয়ে যায়, যার ফলে চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যায়।

আরো পড়ুন:

উপসংহার 

চুলকে সতেজ ও সুন্দর রাখতে সঠিক পুষ্টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চুলের যত্নে প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক এবং ভিটামিন- A,C,E এর মতো পুষ্টি চুলের একাধিক সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়। চুলের যত্নে এই পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো – ডিম, চর্বিহীন মাংস, বাদাম, সবুজ শাকসবজি। সামগ্রিকভাবে চুলের যত্ন নেওয়া শরীরের যত্ন নেওয়া থেকে শুরু হয়। তাই সুষম খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে নিজেকে পুষ্ট করা হতে পারে চুলের যত্নের অন্যতম ভালো অভ্যাস।

Leave a Comment